—— কৃষ্ণপদ ঘোষ।
অসহ্য বদ্ধ জীবনে আজ
একি অন্তর যাতনা,
চারিদিকে মোর ত্রাসের প্রাচীর
বাহিরে মৃত্যু পরোয়ানা।
শৃঙ্খলিত গতিহীন স্বাধীনতা
নিজের কাছে পরাধীন,
স্তব্ধ জীবন গভীর সন্ত্রাসে
জাগ্রত কর্মহীন।
আকাশে মুক্ত বিহঙ্গ উড্ডীন
তার স্বাধীন চেতনা,
চারদিকে মোর কারাগার ঘোর
বাহিরে মৃত্যু পরোয়ানা।
বিশ্ব নিখিল আজ রক্ত পঙ্কিল
মানবের গরহিত কারণে,
মারণাস্ত্র সৃষ্টির কদর্য উল্লাসে
আহ্বান তার মরণে।
আজ সৃষ্টির কাছে স্রষ্টার ত্রাস
একি দুঃসহ দিন,
মরিছে মানুষ মারিছে মানুষই
তাহারা অর্বাচীন।
আজ বিশ্ব জুড়ে অদৃশ্য বাতাসে
মৃত্যুর আনাগোনা,
চারদিকে তাই পাষাণ প্রাচীর
বাহিরে মৃত্যু পরোয়ানা।
অবরুদ্ধ সতর্করুদ্ধ দূর্গ প্রাকার
তবু নাই কোন সান্ত্বনা,
সুপ্ত ভুবন মৃত্যু পুরী ব’সে ব’সে
মনেতে প্রহর গোণা।
কি হয় কি হয় সদা ভয়
প্রকৃতির একি ছলনা,
স্তব্ধ ভারত সমগ্ৰ ভুবন
নাই কোন কর্মতাড়না।
মানুষ এনেছে মানুষের তরে
এই সীমাহীন যন্ত্রণা,
চারদিকে তার পাষাণ প্রাচীর
বাহিরে মৃত্যু পরোয়ানা।
আজও উদিত দিবাকর ভাস্বর
পূরবের গগনে,
তটিনী ছন্দিনী কল্লোলে গামিনী
সাগরের সন্ধানে।
অটবীর গহনে দক্ষিণা পবনে
হিল্লোলে মাতনা,
ব্যথিত মনে বসে গৃহ কোণে
দুঃসহ বেদনা।
সীমার মাঝে অসীম হৃদয়
নিবিড় সে বঞ্চনা,
চারিদিকে মোর প্রাচীর কঠোর
বাহিরে মৃত্যু পরোয়ানা।
বদ্ধ কারাগারে মন হাহাকারে
মনেরে দিই সান্ত্বনা,
দূরীভূত যামিনী পুলকিত মেদিনী
অন্তরে কর্মের প্রেরণা।
কর্ম চঞ্চল মানব সকল
নানা পথে আনাগোনা,
নাই ত্রাস মৃত্যুর আভাস
আনন্দ সঙ্গীত মূর্ছনা।
আজ জীবনের চেয়ে জীবিকা বড়
হইল বারেক ধারণা,
চারিদিকে মোর রুদ্ধ প্রাচীর
বাহিরে মৃত্যু পরোয়ানা।
––––
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});