কী যেন দেখি
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
****************
ভেবে দেখি,
অতীতের কত কথা স্মৃতির আয়না থেকে
যা কিনা মুখর আজ অনাদি সত্যের ওপর
নিঃশব্দ বালুকণার মাঝে রেখেছে আমায়
নতুন নক্ষত্রের আলেয়া থেকে
বেছে নিতে নিজ আচ্ছাদন।
আরও দেখি ,
বন্ধুর পথ
কত বিষময় আজ কুতুহলে
কালের অন্তিম নিঃসহায়
নীরবে নিভৃতে ধোঁয়ার কুন্ডলীসম
এঁকে চলে এক অমূল্য রতন।
যে ছবিতে আন্দোলনের অন্যতম প্রধান
করছে আমায় বিদ্রুপ
অহর্নিশ,
উপেক্ষার বানী হতে
সম্মান কে দিয়েছে মুছে
কালের যাত্রাপথে।
হে পৃথিবী, হে অনাদি অনন্ত
অন্ধকারের পাতাল থেকে
কেন তুলে এনেছো আমায় তবে
এ চলাচলের মাঝখানে!
নাম কেউ করেনা আর
দেয়না মর্যাদা এতটুকু
নিরালায় নির্মল সুশীল বাতায়নে
বিরোধী আবহাওয়ায়।
সেই আঁধারের প্রান্তদেশে
কেন এগিয়ে নিয়ে যাও তবে
নিরর্থক বহ্ণিছায়ায়
অপূর্ণতার সংশয়ে!
হে পাখি, হে মেঘে ঢাকা আকাশ
দাও না শিখিয়ে তোমাদের লাগি
গান্ডীবের পূর্ণ ব্যবহার এবার
সত্য বলে যা চিহ্নিত রয়েছে
সবটুকুর মাঝে।
যেন বলতে পারি প্রত্যক্ষ ব্যবহারের
নির্ভেজাল বাষ্পীয় সন্ধানে
আমার নামের আসল পরিচয়।
সত্য যে সত্য সদাই
দূরবীনেও যাকে যায় না দেখা
তারই জন্যে আমার
এই নিত্য পরিচয়।।
কে যেন আড়াল থেকে ডেকে নেয় তখনই আমায়
ফেলে যায় এক আদিম বিশ্বাস
ভুলে যেওনা পৃথিবীর সবচেয়ে গূঢ়
রহস্যের বেদনা।
তুমি কেউ নও, কেউ যায়নি ভুলে তোমায়
এ মহাদেশের একটি কণামাত্র তুমি
অসংখ্য গিরিখাত রয়েছে ভিতরে তোমার
তরল পদার্থের মতো নির্বাক নিশ্চিত
অবুঝ প্রকাশের অন্তরালে।
সেই আঁধারের বিচ্ছিন্নতায় তোমার স্থান
ঐ কাঁপন ধরানো
পৌষের শীতে শিউলির মতো
চঞ্চলতায়
নকশার ঢংয়ে।
ভেঙে যেও না–
প্রতিজ্ঞা থাক অন্তরে তোমার
আমি সত্য আমি নিরবচ্ছিন্ন।
বিষাক্ত বায়ু নয়
আমি অগম্য সত্তার মাঝে
পাতার হিল্লোল
হাওয়ার চঞ্চলতা
কল্পনার অতীত
ধূসরের নীলিমার
এক অফুরন্ত আবিস্কার।।
নতুন নতুন বিশ্বাস
জন্ম নিয়েছে তখনই
অবশেষে
এক বর্ষণ ক্লান্ত
ক্ষণজীবীদের মতো
উপেক্ষার পরিচয় বহন করে।