কবিতা -গল্প কি 🚩এই যুগে সময়ের অভাবে ছোট হবে?
————————————–
— ঋদেনদিক মিত্রো
অল্প বুদ্ধির লোকের ইচ্ছাতে বা ফাঁকিবাজ পাঠকের ইচ্ছেতে যেমন সাহিত্য হবে না, তেমনি উন্নত চিন্তা নিয়ে চর্চা করতে ভয় পায়, — এমন পাবলিকদের পাঠক বলা হয় না, এবং তাই এদের জন্য সাহিত্য লেখা হয় না ! সাহিত্য লেখা হয় নানা মাত্রিক অনুভূতির বিকাশের জন্য, যেটা চেতনার বিবর্তনকে সাহায্য করে !
যাঁরা দাবী করেন যে — কবিতা, গল্প, এখন বড় আকারে হবে না, ছোট করতে হবে, কারণ নাকি, এ যুগে লোক বড় লেখা পড়ে না, মোবাইলেই প্রায় পড়ে, তাও short note.
কিন্তু, সেটা কখনোই আস্কারা দেওয়া হবে না ! কারণ টা শুরুতে জানিয়েছি !
তাই, কবিতা ছোট সাইজ বা সরল নিয়মে লেখার দরকার নেই, কারণ এটা অল্প শিক্ষিতের কাছে যাবে বলে — এমন কোনো চিঠি নয় !
সাহিত্য তাই মুক্ত ভাবে চলবে, স্থূল চাহিদার পাবলিক এর বই-বিমুখ অভ্যেসকে আস্কারা দিয়ে লেখা হবে না !
তাই যদি কেউ করতে চান, তাহলে কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয় বাদ দিয়ে ইস্কুল গুলি শুধু থাকবে !
মোবাইল বাদ দিয়ে land ফোন আনতে হবে, আধুনিক পোশাক বাদ দিয়ে গাছের ছাল পরতে হবে, উন্নত ব্যবস্থার বাড়ি বাদ দিয়ে গুহায় থাকতে হবে, আধুনিক গাড়ি বাদ দিয়ে গরুর গাড়ির যুগ ফিরিয়ে আনতে হবে !
এগিয়ে যাওয়া মানুষেরা এগিয়ে যাবে, পিছিয়ে থাকা মানুষেরা এগিয়ে যাওয়াদের অনুসরণ করবে ! বিপরীত টা নয় !
এটাই শিক্ষা, এটাই সভ্যতা !
আর একটি কথা, বিদেশে ছাপা বই না নিয়ে বই পড়ার স্বাদ তারা পায় না ! বই মানে ছাপা, হাতে রাখা গ্রন্থ !
আধুনিক কালের নিয়মে নাকি ছাপা বই পড়া উঠে যাচ্ছে, বা দীর্ঘ কবিতা পড়া উঠে যাচ্ছে বলে যে দাবী তোলা হচ্ছে, সেটা ভুল, কারণ, যারা পাঠক তারা পূর্নতা পেতেই পড়ে, বই কে তারা খেলায় খবর, রাজনীতির খবর ভাবেনা, বই কে তারা সমুদ্র ভেবেই স্পর্শ করে !
সবাই যেটা পড়বে সেটা তো সাহিত্য নয়, অক্ষর-জ্ঞান শেখানোর জন্য পুস্তিকা হতে পারে !
সেই পুস্তিকা ছেড়ে অনেক হাজার যোজন পেরিয়ে তবে মানুষ সাহিত্য পড়ার অধিকার লাভ করে !
আরো একটা কথা, যে-ভাব ও রস যতটা যে-ভাবে বললে তার পূর্নতা আসবে, সেই ভাবেই বলতে হবে ! না হলে তো সেটার রূপ সাহিত্য হলো না !
এটা কি শিশুর খাবার নাকি, একটু দাও, তরল করে দাও, না হলে গিলতে পারবে না !
আসলে সাহিত্য জিনিসটা কী — এই জ্ঞান না নিয়ে যাঁরা সাহিত্য পড়েন, তাঁরা ই বলেন, —- এযুগে কজনে আর সাহিত্য পড়ে ! —- এ যুগে বড় কবিতা গল্প নাটক পড়ার সময় নেই !— এ যুগে বই পড়া পরপর উঠে যাচ্ছে —!
বই পড়ার জন্য অক্ষর জ্ঞানকে বলে প্রাথমিক শিক্ষা,
বই পড়ে কিছু কাজ কাম পাওয়ার জন্য কোনো ডিগ্রী নেওয়াকে বলে শিক্ষা, আর সাহিত্য পড়াকে বলে সভ্যতা !
এদেশ যদি সভ্য না হয়, বা এই দেশের সমাজে যদি অসভ্যদের সংখ্যা বেশী থাকে, তাহলে সভ্য করার দায়িত্ব আমাদের সবাইকে নিতে হবে, তখনি আমরা লেখক বা পাঠক !
না হলে আমরা সব অসভ্য জীব, চলুন গাছের ছাল পরে বা আরো ভালো, কিছু না পরে ঘুরে বেড়াই !
এর পর বই পড়তে ভয় পাওয়া লোকগুলি দাবী করবে —- আগের কবিদের বড় কবিতা গুলি ছোট করে লেখা হোক, কেটে ছেটে, না হলে এই যুগের সাথে বেমানান !
তাই কি বলবেন কেউ?
——————————-