শিশু দিবসে দুনিয়ার সমস্ত শিশুর জীবন ফুলের মতো সুন্দর হোক।
কবিতা–আমার দেশের পথশিশুরা
কলমে–নীতা কবি মুখার্জী
14/11/2022
শিশু দিবসের মহান লগ্নে শিশুদের ভালোবেসে
স্নেহ চুম্বন দিয়ে যান যেন দেবতা মাটিতে এসে।
মাতৃহারা, অনাথ শিশু সহায় সম্বলহীন,
একটু সহায় হবে কি তোমরা?শোধ হবে মনুয্যত্বের ঋণ?
হোটেলে , বাজারে ,রেস্তোরাঁতে যত শিশু মজদূর
ছিঁড়ে ফেলে দাও শৃঙ্খল তার, অবহেলা করো দূর।
শিশুরা হাসবে, খেলবে, গাইবে, আনন্দে মতোয়ারা
সেই সুযোগেই শিখে নেবে তারা জীবনবোধের ধারা।
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হোক বা না হোক মানুষ তো হোক আগে,
বিবেক- বুদ্ধি, পরোপকার আর মনুষ্যত্ব যেন জাগে।
বিদেশে গিয়ে টাকা রোজগারের যন্ত্র যেন না হয়,
আর্ত-দুখীর পাশে থেকে যেন সমাজের ভার বয়।
এই সমাজের পিতা মাতা আর
অভিভাবকের দল
চাপিয়ে দিচ্ছে প্রত্যাশার বোঝা,শিশুরা যে টলমল।
সুন্দর আর নিষ্পাপ শিশুকে ঠিক মতো দাও বাড়তে
অতিরিক্ত আকাঙ্খার বোঝা চাপিও না তাদের মারতে।
ছোট্ট কুঁড়িরা হতাশায় ভোগে প্রতিযোগিতার ভিড়ে
মৃত্যুর কোলে সঁপে দেয় নিজেকে, অসহায় ইঁদুর দৌড়ে।
একটি ফুলকে যত্ন করে পালন করুক মা!
বিদ্যাসাগর, নেতাজীর মতো
করে তুলুক উপমা।
আমার দেশের, আমার মাটির ছোট্ট কুঁড়িশিশু যত
ফুটে ওঠে যেন কোমল কুসুম, শতদল শত শত।
স্বার্থপর এই দুনিয়াটাতে পথশিশু আজ বড়ো বিপন্ন!
ঘরে ভাত নাই ! কে তুলে দেবে তাদের মুখে দুমুঠো অন্ন?
সারাদিন ধরে কাগজ কুড়ায় ছেলেটা পাড়ায় পাড়ায়
কখনো আবার চোর বলে তাকে পুলিশ ডেকে ধরায়।
ছোট্ট মেয়েটা ভোরবেলা থেকে কাজ করে বাড়ি, বাড়ি,
কেউ কেউ তাকে মারধর করে দোষী সাব্যস্তও করি।
ফুটপাতে বসে পালিস করে কচি, সুকোমল ছেলে,
পালিস করিয়ে পয়সা দিই না বেচারা ছোট্ট বলে।
স্বাধীনতা দিবস পালনের দিনে গালভরা গায় গান,
ভারত-মাতাকে ভালোবাসি বলে করে কতো সম্মান!
ছোট্ট ছোট্ট পথশিশুরা যে নিষ্পেষনের শিকার,
কখনো তো তা তাকিয়ে দেখি না, করি না তো প্রতিকার।
কেউ কেউ আবার ছোট ছেলে ডেকে কাজ দিই ভালোবেসে
আধা মজুরী দিই যে তাদের অম্লান, অক্লেশে।
অফিসের বাবু ,সাহেব, সুবো, কত যে সভ্যমানুষ,
রেস্তোরাঁতে প্লেট ধুতে দেখেও ফেরেনা কখনো হুঁশ।
কবে এ শিশুরা মুক্তি পাবে? জীবনে জ্বলবে আলো?
কবে শেষ হবে এই নিপীড়ন? তাদেরও বাসবে ভালো?
ধনীর ছেলেরা স্কুলে যাবে, শুধু চেয়ে থাকবে পথশিশুরা?
জুটবে না কোনো শিক্ষা দীক্ষা, শুধু ধুঁকে ধুঁকে মরা?
শোনো রে মানুষ ভাই,
পৃথিবীতে এসে এমন কিছু করো যাতে ওরা বেঁচে যায়।