Spread the love

নববর্ষে কামনা
শ্যামল মণ্ডল

Editor : Shyamal Mondal

পুরনো সাল দিনের শেষে
শপথ করি সাধুর বেশে
মানুষ হতে চাই
যা গেছে তা পুরনো হোক
ভুলিতে চাই পুরনো শোক
মানুষ হতে চাই।

অন্ধ হয়ে ভুল করেছি
এতদিনে ভুল বুঝেছি,
করবো না ভুল আর।
শেষের প্রহর কাটুক ভালো
রাতে উঠুক চাঁদের আলো
পুরনো হোক পার।

সাদার মাঝে ছোট্ট কালো দাগ
লুকিয়ে রাখা মনের অনুরাগ
আজ হয়ে যাক সাফ,
আরো কিছু অজানা ভুল
থাকলে কোথাও বেদনা শূল
করুন সবাই মাফ।

কাল প্রভাতীর ঊদয় বেলা
নতুন বছর খুশির মেলা
নূতন সূর্য চাই,
এই সমাজের ভীষণ খরায়
মান-হুশ যেন হৃদয় ভরায়
মানুষ হতে চাই।

*—————————-*
” আমার আবির্ভাবের হিতোপদেশ ”
কলমে:- ‘অন্তরাক্ষী’

” আসছি আমি নতুন রূপে
খুব দেরী নেই, আর কিছুক্ষণ;
আসবো নিজেই খোলস ছেড়ে
ধনুক-ভাঙা করেছি পণ।

শুভ-লগ্নেই বিশ্ব-বাসী —-
করবে আমায় নবীন বরণ;
হই-হুল্লোড়ে মাতবে সব্বাই
(আমার); সময় শেষেই আবার মরণ!

এমন-ভাবেই ঘুরে-ফিরে
আসবোই আমি বারেবারে;
আলোক মালায় ভরবে জগৎ
মধ্যরাতে গগন-পারে।

দুঃখ-গ্লানি,বিদ্বেষ ভুলে
বিবেক-বোধের ঘটাও উন্মেষ;
জগৎ সেরা তোমরা মানুষ
প্রমাণ করো এই উপদেশ !! ”
*—————————*
শুভ নিউ ইয়ারের এক আকাশ
শুভেচ্ছা সহ

আমন্ত্রণ
দীননাথ চক্রবর্তী

আমার আর নেইযে উপায় কাছে থাকার
তোমায় আমন্ত্রণ ,
আতস বাজির রোশনাই রোশনাই
নতুন দিনের শুভ কামনায়
সুরে রাগে আগমন
তোমায় আমন্ত্রণ ।

আমি আজ স্মৃতির স্মরণীকা
অতীত সঙ্গ রোমন্থন ,
কী গান গেয়েছি জানিনা আমি
আমন্ত্রিত মঞ্চে এ`কদিন কতখানি
এবার বিদায় লগন
তোমায় নিমন্ত্রণ ।

গাইতে গাইতে থাকতে থাকতে
কখন যেন হৃদয় বন্ধন ,
অতিথি ভুলে স্বজন আপন
ঠোকাঠুকি মাখামাখি দিনক্ষণ
আটপৌরে সারাক্ষণ
তোমায় আমন্ত্রণ ।

*—————————-*
এস নুতন
সুতপা দাস

কবি সুতপা দাস
এস এস নতুন বছর
এস অনেক অনেক ভাল নিয়ে
ভাল হোক দেশের দশের সবার ৷
ভাল হোক পশু পাখী-সর্বজীবের
ভাল হোক, ভাল হোক- এ ধরার ৷

জাতি ধর্ম বিদ্বেষে যেন
দ্বন্দ না হয় মানুষে মানুষে
কর্তৃত্ব আধিপত্বের অহংকারে যেন
যুদ্ধ না বাঁধে একে অন্য দেশে
চুড়ান্ত মানব ভুলেরই পরিনামে যেন
আর না আসে ধেয়ে কোন
মারণ ব্যাধি আবার করে
এই বিশ্ব পরিসরে ৷

বিজ্ঞান , তুমি আর মারণাস্ত্র তৈরী কোরোনা
ধর্ম তুমি মনুষ্যত্বকেও ছাপিয়ে যেওনা
প্রকৃতি তুমি বন্যাপ্লাবনে ভুমিকম্পে
দুর্যোগে— কোন অত্যয় ধ্বংস হেনো না ৷

দ্বেষ ঘৃনা ঈর্ষা হিংসা অহংকার বাদে
পারেনা থাকতে এ পৃথিবীতে
শুধু প্রেম – ভালবাসা নির্বিবাদে ?
এমনই আশা বাঁধি বুকে এসো
সবে বরণ করি আজি এ নববর্ষ
ভরি তুলি যত আছে ভাল —
কাব্য নৃত্য গীত উল্লাস আনন্দ হর্ষ ৷

সর্ব মঙ্গল কামনায়
*——————————-*
জীবন ভালোবাসায়
শ্রী বিশ্বনাথ সাহা

অনুপ্রাসের বাদ্যি বাজে
তোমার’ই ছোঁয়ায়
মনের মাঝে তোমার পরশ
মুগ্ধতা ছড়ায়।

ফাগুন দিনে আগুন রাঙা
পলাশ ফুলের বনে
আমার সাথে তুমি ছিলে
আজকে শুধু মনে।

আর থেকো না আপন মনে
ঘরের কোণে একা
খোলা রোদে এসো এবার
পাবে খুশির দেখা।

চলো না আজ শীতের দিনে
সেই বাগানে যাই
নাই বা থাকলো সে ফুল এবার
তোমায় কাছে পাই।

আলাপ করে একা থাকার
মনের দুঃখ জুড়ায়
বন্ধুতারও উঠবে জোয়ার
জীবন ভালোবাসায়।

*—————————–*

নতুন বছর আসে,
তারিখ বদলাতে থাকে।
মনে হয় , আসে নতুন আশা;
মানুষ তো পালটায় না..।
সে তো একই থাকে!
বছরের সাথে সাথে
মানুষ যদি নিজেকে নবীকৃত করতো,
কতই না ভালো হতো !!!!

অগ্নিমিত্র
*—————————-*
“পহেলা”
      হান্নান বিশ্বাস

কবি হান্নান বিশ্বাস

আর মাত্র কিছুক্ষণ পর…..
তুমি আসবে তো!
আগেও তো এসেছিলে,
একবার নয় বারবার।
পেরেছো কি দিতে কাউকে
জীবনের কোন ঠিকানা?
হয়তো কিছুটা পেরেছো,
বাকী রয়ে গেছে অনেকটা।
চাওয়া পাওয়ার হিসেব
মেলেনি তো কখনো,
এবার তুমি কি পারবে পহেলা?
চাঁদও একদিন হাসতে চেয়েছিল
দিন, মাস, বছর ধরে;
থেমে যেতে হয় তাঁকেও,
মাত্র এক পক্ষকাল পরে।
আতস বাজির আলোয়,
আম পাতা আর ফুলে,
অনেক তো হেসেছো দেখেছি;
পেরেছো হাসাতে সেই পূজারীদের,
যারা অঞ্জলি তোমাকে দিয়েছে?
হওনা চিরযৌবনা,
পথের দিশারী!
খুলে দাও মানুষ রূপী
অমানুষের মুখোশ,
আর চশমার রঙিন কাঁচ!
পূর্ণিমার স্নিগ্ধ আলো-
পড়ুক ধরার গায়,
নোংরা পোষাক ছেড়ে
নতুনটা পরে মনটাকে করুক,
পোশাকের সাথে মানানসই!
*——————————*
কেন ভেদাভেদ!
কলমে- বাসুদেব মন্ডল

কবি বাসুদেব মণ্ডল
গরীবের দুলাল কিম্বা
রাজার কুমার,
সকলেই প্রেরিত হেথা কেন
ভেদাভেদ আবার।

অর্থবানের খাদ‍্যভান্ডার পূর্ণ
গরীবের ভান্ডার শূন্য,
তাদের শিশুরা খায় কেক ওরা
ফেন্টা সেজে ধরে ভেক।

প্রভু তুমি দীনহীন সকলকে
করেছ আপন,
ওরা নানা ছলাকলায় করে
তোমায় জ্বালাতন।

জগতে তোমার জন্মদিন পালিত
হয় মহা আড়ম্বরে,
রকমারি দোকানে সাজানো
খাবার থরে থরে।

গরীবের সন্তান পথশিশু
ঘোরে দ্বারে দ্বারে,
ক্ষুধার জ্বালায় চোখে জল
কেউ ডাকে না তারে।।

*——————————-*

জটলা
ভুবন দা

কবি ভূবন বন্দোপাধ্যায়

পিকনিক হবে বলে
গজু ভজু পটলা,
রোদে বসে মাঠটায়
করে সব জটলা ।

গজু বলে তুই ভজু
খিচুড়িটা বাঁধবি,
পটলা মশলা তুই
ভাল করে বাঁটবি ।

টমেটোর চাটনিটা
আর আলু পোস্ত,
চিকেনটা ঝাল ঝাল
হয় যেন দোস্ত ।

গতবারে রাননাটা
হয়নি তো মন্দ,
এখনো যে লেগে আছে
হাতে তার গন্ধ ।
*_______*

এসো হে নতুন
——————-
রাজকুমার সরকার

রাজকুমার সরকার
পুরাতনকে ভুলে গিয়ে
আবাহন নতুনেরে
এসো হে নতুন —
ভুলে যাই সব ব্যথা-বেদনা, হতাশা- অভিমান।
মনের মলিনতা, কালিমা দুর হোক;বিশুদ্ধকর্মে জীবন হোক রঙিন বসন্ত
নতুন বার্তা আসুক হৃদয়জুড়ে
নতুন করে বেঁচে থাকি আমরা।
*——————————–*

শুভত্ব
শান্তনু ঘোষ

কবি শান্তনু ঘোষ

অনেকের কাছেই আমি ঋণী
কীভাবে মেটাবো এই ঋণ ?
একসময় মন বলে, এই সমস্ত
মানুষের কাছে
ঋণী হয়ে থাকো চিরদিন,
এতেই তোমার মঙ্গল, শুভত্ব,
আর এসব ছাপিয়ে কখন যেন
বিবর্ণ হলুদ পাতার মতন ঝরে যায়
পুরানো বছরের শেষ মুহূর্তটুকু
নতুনের ছোঁয়া নিয়ে মনে মনে বলি,
শুভ হোক এই চিরন্তন, সকলে
সারা বছর শুভত্ব ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি।

*——————————–*
স্বয়ংসিদ্ধ
কলমে -কৃষ্ণকলি বেরা

কবি কৃষ্ণ কলি বেরা
দুঃখের প্রাপ্তিতে যখন অন্তর ঋদ্ধ হয়,তখন পাললিক শিলার মত স্তরায়ণের পর স্তরায়ণে শরীর কখন যেন মহীধরে পরিণত হয় নিজের অজান্তেই।
মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া কি এক? বোধ হয় না? তাই কিছু ঘটনা,পরিস্থিতিকে মেনে নিতে হয় মনের বিরোধীতা স্বত্ত্বেও।
এইভাবে চলতে, চলতে
জীবন পথে আছাড় খেতে খেতে একসময় ধাতস্থ হয়ে যায় গোটা মানুষটাই। বাসনাশূণ্য মুক্ত জীবন
নদে কবিতার ঝর্ণাধারায়
অকল্মষ স্নানে স্বয়ংসম্পূর্ণ
একটি স্বত্ত্বার নবজন্ম।
*————————–*

আমিও ও বিশ্ব ( মুক্তগদ্য )

অরুণাভ জীবন দত্ত

কবি অরুণাভ দত্ত

সময়ে সময়ে নিজের ভেতরে নিজের ঢোকার খুব দরকার হয়ে দাঁড়ায়। আমিও সমাজের আট দশ জনের মতো বিশ্বায়নের যুগে ইতস্তত ঘোরাফেরা করি , এক নিমেষে সারা বিশ্বকে দেখি… সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে এক নিমেষে কথা বলি। কিন্তু নিজের ভেতরে ঢুকি কখনও! একটা সময়ে নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলতে হয়। নিজেকেও চিনতে হয়, নিজের ভেতরে নিজেকে দেখতে হয়। নিজের ভেতরটা দেখা বোধহয় সবথেকে বেশি প্রয়োজন।
নিজের চেহারার সামনে কখনও কখনও এসে দাঁড়াই। খারাপ বলে যা ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম, তার ভালোটা কখনও খুঁজতে যাইনি। যাকে নিজের লোক ভেবে বিশ্বাস করেছি তার কাছ থেকেই সব থেকে বেশি দুঃখ পেয়েছি। যাকে ভালো লেগেছিল তার উপর দায়িত্ব বোধের পারদ চড়িয়ে অন্যায় করেছি। নিজে আমি কতটা ঠিক! আমার ক্ষমতা কতটা যুক্তিসঙ্গত ! আমার সরলতা কতটা বিরক্তিকর আমার নিজের জন্য! আমার অহংকার কতটা অপরের ক্ষতির কারণ! খুঁজে দেখেছি কি!কোন কোন দিন কিছু না করে চুপচাপ থাকার চেয়ে নিজের ভেতরে নিজেকে দেখাও একটা দর্শন! যা ভেতরে ভেতরে নিজেকে জাগিয়ে তোলে।
*——————————-*

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *