আমার কবি হওয়ার গল্প(আমার জীবনের ঘটনা)
কলমে –নীতা কবি মুখার্জী
মানব জীবন শ্রেষ্ঠ জীবন, মহামূল্যবান তাই
এই জীবনের প্রতি বাঁকে আছে চড়াই এবং উতরাই
জীবন ছিলো সহজ, সরল, সুন্দর, মধুমাখা
বাবা-মায়ের আদরে, শাসনে এই পৃথিবী দেখা।
বিয়ে হলো, সংসার হলো, সন্তান এলো তাতে
জীবন-নদী বইলো সজোরে নেশার মেদুরতাতে
পড়ন্ত বয়সে কবি হবার শখ চেপে বসলো মাথায়
কালি আর কলম সঙ্গী হলো, কবিতা কেবলই ভাবায়।
প্রিয় কবির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যবে যাই
আবৃত্তি করবো মনস্থ করেই বাড়ী থেকে বের হই
কর্মকর্তা বললেন উঠে, “ও হে শিল্পী ভাই
কবিতা এনেছো? কবির আসরে কবিতাই পড়া চায়”।
থতমত আমি, কবি তো নই, কবিতা কোথায় পাই?
মাথায় হেঁট করে বসে থেকে থেকে তারপরে বাড়ী যাই।
বাড়ী ফিরে এসে সরস্বতী চরণে আছাড়ি-পাছাড়ি পড়ি
কবিতা লেখা কি আমার কর্ম? বাঁচাও বিদ্যেশ্বরী।
একদিন গেল, দুদিন গেল, তারপরে সাহস করে
ধরলাম কলম, মা বললেন, “লেখ্ রে আমার বরে”
মায়ের আশীষে হিজিবিজি লেখা হয়ে গেল কবিতা
ফেসবুক আর হোয়াটসআপ ফোনে করি তার ভনিতা।
কতো যে লাইক, কতো যে কমেন্ট, পাই আজ দিনরাত
সবাই বলে, “দারুণ কবিতা, বাহ্ রে, কেয়াবাত”
আমি বলি, “মা গো, বর যদি দিলে, কেন এতো দেরী তা”?
পঞ্চাশের কোঠা পার করে দিলে কবি হওয়ার বারতা”।
আত্মীয়-কুটুম্ব সবাই বলে, এ আবার হলো কি?
বুড়াকালে চূড়াকরণ, সকলে বললো, হায়!একি?
যে যাই বলুক, সরস্বতী-চরণে মিনতি করি বার বার
আমার কবিতা ভালো যেন লাগে জগতের সবাকার।
শেষের সেদিনে অসীম শূন্যে দিতে হবে জানি পাড়ি
সকলের মনে এতোটুকু স্থান করে যেতে যেন পারি।
Copyright@nitakabi
21/10/2021