অন্তর্মুখী না বহির্মুখী: সত্যেন্দ্র নাথ পাইন
আমাকে কেউ পছন্দ করেনা
কেননা, আমি নাকি বড় অন্তর্মুখী।
বহির্মুখী হতে হবে। বা বহির্মুখী
কবিতা লিখতে হবে। যেখানে
থাকবে হীরে প্রবাল বা পোকরাজের
সমাবেশ একসাথে।
কিংবা একটা নিরেট কান্নার
অসাধারণ একটা ছোট্ট পুতুল
দুর্লভ এই রসাতলে। যেখানে আকাশের
ছায়া পড়বে অদৃশ্যকাঁটা হয়ে
মাটির ধরাতলে মূল্যবান সময়ের
মূলে। জীবন অতিষ্ঠ হবে না অথচ
উঠবে আর পাঁচজন হাইপ্রোফাইল গৃহস্থ
বাড়ির সূর্যালোকে
মূল্যবান সময়ের মধ্যে অমূল্য যুদ্ধের হুঙ্কারে।
বুঝিনি বা বলা ভালো বুঝতে পারিনি ব্যাপারটা তখন।
সেই থেকে শুরু করে আজ অবধি কবিতাগুলো বোধহয় বৃথাই হয়েছে আমার ।
আমি হয়ে গেছি নিষ্কর্মার ঢেঁকি ।
কিন্তু যারা আমার লেখা পড়বে বা পড়ছে
তারা কি মেনে নিতে পারছে আমায়!
আমি তো ঋণীই থেকে যাচ্ছি।
আর এখনকার মতো কবি ভায়েরা
আমাকে নিয়ে যা খুশি বলছে
বিদ্রুপের হাসি হাসতে হাসতে
ঠেলে দিয়ে আরও গভীর নিম্নচাপে।।
ও কবি গন ,আমাকে সরাসরি শিখিয়ে দাওনা
তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু মালমশলা
নাহয় ঋণীই থেকে যাব চিরদিন
তোমাদের কাছে।
পায়ে পড়ি তোমাদের , একটা কিছু ক্লু দাও না
আমি নিতান্তই এক সাধারণ মানুষ।
আমার দুর্ভাগ্য যে তোমাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে
আমাকে তোমাদের পরিবারে নিচ্ছো।
এটা আমার জয় নয়, হার।
বুঝে গেছি
আমার পোড়া কপালে জুটছে না
জিতে যাবার আঙ্গিক
তোমরাও হন্যে হয়ে ফিরছো
এক দুর্ভাগা জাতি হিসেবে আমার
কুরুক্ষেত্রে।।
এখন প্রশ্ন করবে হয়তো
কী এমন হলো হঠাৎ!
আমি বললাম –আমি যে বড় উচ্চাকাঙ্খী
তোমাদের সভায় আজ ব্রাত্য হয়েছি বলে
করজোড়ে করি অনুরোধ
অন্তত দশজন বলুক–
আমার লেখা গুলো
এবার হয়েছে গ্রাহ্য!
আমি তোমাদের দলে।
বয়সটা আমার নিতান্তই কম নয়
নিতান্তই কাঁচা আমের শরবত আমি নই
আমি লিখি অনন্তকালের দুঃস্বপ্নের
হাতিয়ার নিয়ে ।
নাহয়
কোনো রবিঠাকুরের লেখাই
তোমরা পাঠিয়ে দিও
দেখবো পারি কিনা।
দ্যাখো আমি বাঙালি জাতির
একটা সামান্য কিছু
উপক্রমনিকা
। আমাকে দুচ্ছাই করে দূরে
ফেলে দিও না । আমি পারলেও তো
পারি সভায় বসতে,
তাঁকে নকল করে
সৃষ্টিকর্তার কাছে জবাবদিহি করতে।
এখনই রুদ্র কালবৈশাখীর ঝড়
এলো বলে
হয়তো পাল ছিঁড়ে মাথায় পড়বে
পালিয়ে যাবে সজল মেঘের মতো
হৈ হৈ করে গর্জন তুলে তারা।
তা হোক্। ঝাউবনের হাওয়ায় ভেসে যায়
ঐ অলকানন্দার দৌরাত্ম।
আমি সব অভিমান অভিযোগ ভুলে চলি
সন্ধির পতাকা উড়িয়ে
বাঙালির রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে
আরও একবার তোমাদের পদতলে।।
হে বিধাতা পৃথিবীতে শান্তি আসুক না!
তুমি আমার নটেশাকটি মুড়িয়ে দেবে না
তারও আগে!কেন এ অসামান্য ভূমিকা
তোমার!
আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছো কেন
এতকাল !!!!!