ভড়ং
– অগ্নিমিত্র
আজকাল সাধু বাবারা বেশ অদ্ভুত ধরনের হচ্ছেন ।
আমি এক জায়গায় পড়তে গিয়েছিলাম । সেখানে সব নামীদামি জ্ঞানীগুণী লোকজন পড়তো । ঐ সময়ে ওই অঞ্চলে কোনো এক সাধুবাবা, ধরা যাক তাঁর নাম লক্ষ্মণ সুলেমান, খুব বিখ্যাত হয়েছিলেন । বিরাট তাঁর আশ্রম ও বিশাল কর্মকাণ্ড । তাঁর ভক্তও ছিল অগুনতি ।…আমি যেখানে পড়তাম সেখানেই তাঁর গুণমুগ্ধদের সংখ্যা শতাধিক । সম্পত্তিও অগাধ ।
পরে এই সাধুবাবার অনেক গোপন কীর্তি ও অসংখ্য সাধনসঙ্গিনীদের সঙ্গে গোপন শারীরিক সম্পর্ক ফাঁস হয়ে যায় । এও জানা যায় যে বাবাজী গোপনে অস্ত্র চোরাচালান, নাবালিকা পাচার প্রভৃতি অসাধু কাজে বিশেষ পোক্ত ছিলেন । তাই তিনি শ্রীঘরে যান !
এর পরের ঘটনাই মারাত্মক । বাবাজীর অন্ধ ভক্তরা রাস্তা অবরোধ করে, লোকজনদের মেরেধরে, পুলিশকে তলোয়ার দিয়ে আক্রমণ করে বিক্ষোভ জানাতে থাকলো; চরম নৈরাজ্যের সৃষ্টি হলো । …
এরকম আরেকজন কীর্তিমান বাবাজী ছিলেন, নাম ধরুন দুরাশারাবণ । এই বাবাজী বয়স্ক, ভক্তও অগণিত! সম্পত্তিও অপার ।…অনেক পরে জানা যায় যে বাবাজী যুবতী মহিলাদের নিজের কোলে বসিয়ে সঙ্গোপনে দীক্ষা দেবার অছিলায় শোষণ করতেন ।
যথারীতি বাবাজীবনের গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ভক্তদের আন্দোলন শুরু হলো । তারপর তা স্তিমিত হয়ে আসে; কেননা ততদিনে এক নতুন সাধুবাবাজীর উদ্ভব হয়েছে! নাম ধরে নিন অমল বাবা।
এই বাবা আমার আপনার মতোই সাধারণ চেহারার । একটা বিশাল সিংহাসনে বসে ‘ দরবার ‘ করেন। ভক্তদের নানা সমস্যার অভূতপূর্ব সমাধান বাতলান। যেমন, কালো চকলেটের বদলে সাদা চকলেট খেলে ভাগ্যদেবীর কৃপা হবে, ডান পাশ ফিরে শুলে উন্নতি হবে ইত্যাদি ।
এই তালিকায় কিন্তু মহিলা সাধু, মানে সাধ্বীরাও আছেন। এক সাধ্বী তো ভক্তদের কোলে কোলে ঘোরেন !
আমিও পাটনায় এরকম এক ভন্ড বাবাজীর পাল্লায় পড়েছিলাম । উনি এক পাঁচ টাকার মেকি রুদ্রাক্ষ আমাকে একশো টাকায় বিক্রি করেন । প্রসাদ হিসেবে টাকাটার এক কোণা একটু ছিঁড়ে দিয়ে দেন ! …
আমরা এদের পাল্লায় পড়ি কেন? কে জানে!! হয়তো আমাদের মনের ভয়ে, যার এরা ফায়দা নেয় ।
এসব ব্যাপারে আরেকটু তো অনুসন্ধান হতেই পারে, তাই না ?!
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿