সংসার কুরুক্ষেত্র
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
**””””‘”””**
সংসার কুরুক্ষেত্র মানে সর্বজন
মানেনি কোনোদিন জ্যেষ্ঠ ভগীরথ নন্দন।
সেই মতো সকলেরে ভাবিয়া আপন
করেন সবার সাথে মধুর আলাপন।
তাতেই ঘটেছে এক মধুর কূট যুদ্ধ
তাতেই হারিয়েছেন তিনি মান সবশুদ্ধ।
সকলে ভাবিতেন তাঁরে অতি সৎ জন
সেই মতো সৎপথে নিত্য করেন আচরন।।
একদিন গভীর রাতে বিভঙ্গ মুরারী
কী কারণে ঢুকলো ভীম তেজে সবকিছু হরি।
জ্যেষ্ঠ ভগীরথ নন্দন তিনি সেইমতো মেনে
এলেন আত্মীয় স্বজন আদি তাঁর নিবাস জেনে।
অধিক রাত ভুল পথ সকলে ধরিল
ঐ ভগীরথ নন্দন তাদের সঠিক জানালো।
সেই মতো সবে মিলে রক্তের বিনিময়ে
প্রণমিলো গুরু মেনে বিনা বাক্যব্যয়ে।।
হঠাৎ সেই খানে কূট দুর্যোধন এসে
সকলকে লইয়া গেল আপন নিবাসে।
জ্যেষ্ঠ ভগীরথ নন্দন সেটা মানতে না পেরে
অতিশয় ক্ষুব্ধ হলেন তাদের উপরে।
সেইক্ষণে কূট দুর্যোধন চুপ থেকে ঘরে
করিলেন মজা উপভোগ স্ত্রীর আদরে।
দাদার দুরবস্থা দেখি আনন্দ বিহ্বল
সহোদর ভাই তাদের সামনে করিলেন ছল।
দুজনাই ভগীরথ নন্দন সকল ফিচারে
কুমতি কে বা বোঝেনি কেহ বুদ্ধি বিচারে।
তাই সরল স্বভাব দাদা যুধিষ্ঠির সম
কর্কশ বাক্য তথা বলিলেন অনুপম।
আশা করেনি কেহ তাঁর এ মতো স্বভাব
চলে গেল গালি দিয়ে না করি ভাব।
সেনা পতি হইলেন তিনি এই কুরুক্ষেত্রে
যিনি যুদ্ধে অপটু আর অন্ধ এ ক্ষেত্রে
যার কোনো মান নেই অতি চরিত্রহীনা
দেবাদিদেব বাঁচালেন তারে বুঝিলেন না !
হয়তোবা আরও কিছু হতে যে পারতো
শল্য রাজের ন্যায় বিনষ্ট সে হইতো।
হইলো না তার জন্য ধন্য হইয়া শেষে
চুপচাপ থেকে গেলেই হতো এই বাড়িতে এসে।
যুদ্ধ চলেছে অতিশয়, চলছে আজোও নিরবধি
পাগল বলিয়া গণ্য করিল সকলে তারে আজ অবধি।
ওরে বাছা জানো সত্যিটা শোনো মন দিয়া
কী কারণে হেন বাক্য বলিলেন হেথায় আসিয়া।
ক্ষম তারে সন্ধি করো যদি বাঁচতে চাও।
নইলে কৌরব সম ধ্বংস হবে এই শিক্ষা নাও।
পাগল তিনি নন বরং তোমরা নীচ জন
কূট কৌশলে জড়িয়ে যারে ভেবেছো আপন
তিনি নন পালনকর্তা, হন হরণ কর্তা
শিক্ষা নাও থাকতে সময় দিলাম বারতা।।
যারা তোমাদের ইচ্ছাশক্তির দিলো বিসর্জন
তাদের দলে যোগ দিয়ে কী করিলে ভীষণ!
ঐ মামা -শল্য রাজ কিন্তু মাদ্রী ভ্রাতা জেনো
ভুল করে মোহের বশে যুদ্ধে কৌরবদের সর্বক্ষণ।
তাঁরোও পতন হয়েছে দৈব দুর্বিপাকে
এটাই নিয়তি, এতেই ঈশ্বরের কৃপা থাকে।
তোমাদের মাতৃভাষা ভুলো না যেন
যারে তোমরা দিলে গালি শাস্তি দিলে হেন
সে ই তোমাদের পালনকর্তা তাতেই সর্ব সুখ
নাহলে ভুগতে হবে, হবে আহাম্মুক।।