পত্র সাহিত্য ভ্যালেন্টাইন্স
বানীব্রত
৭/২/২৩
প্রিয় তরী
কেমন আছ? হঠাৎ কেন চিঠিটা লিখতে শুরু করলাম জানি না। তবে মনের মনিকোঠায় পুরোনো স্মৃতিতে শুকনো গোলাপের কাঁটা যেন আমাকে রক্তাক্ত করছিলো আজ আর তাই.. না থাক অনেক কিছুই তো বলা যায় তবে আগডুম বাগডুম কথার জালে নাই বা জড়ালাম তোমায়। যে ভালোবাসার বন্ধনে তোমায় বেঁধে ছিলাম, সেই বাঁধন যে হাল্কা হয়ে যাচ্ছে তা বুঝতে পারিনি। যেমন ভাবে গাছের চারপাশের মাটিকে কোদাল দিয়ে গর্ত খুঁড়ে দিলে গাছও বুঝতে পারে না সে কখন শিকড় আলগা হয়ে পড়ে যাবে। যেই অবস্থা এখন আমার হয়েছে।
কত স্বপ্ন আঁকা ছিলো তোমার সাথে, কাটিয়েছি কতগুলো বসন্ত। আজও বসন্ত আসে মনের বাগানে ফোটেনা আর শিমুল পলাশ। পিরিচে রাখা শুকিয়ে যাওয়া সাঁচিপান পাতার মতো বিবর্ণ হয়ে যায় মনের আঁতুরঘড়টা।
তোমায় দেখলাম গঙ্গার ধারে। কনে দেখা আলো পড়েছিলো তোমার মুখে, পাশে তোমার বর। মাথা ভর্তি সিঁদুর। হাতের পরে হাত রেখে নতুন জীবনের সুখালাপে ব্যস্ত ছিলে। আমাদের ফেলে আসা সেই দিনের কথাগুলো যেন জলছবি হয়ে আমার হৃদ্ মাঝারে ফুটে উঠছিল। তরী, আজ নিশ্চয়ই তুমি খুব সুখি। আমার মতো বাউন্ডুলে আজ আর বিরক্ত করে না তোমায়। জানো তরী, আমার মন খারাপের বিকেল কাটে ওই গঙ্গার পাড়ে, তোমার স্মৃতিকে ঘিরে। আজ তোমায় দেখার পর আমাকে অপদার্থ বলে বলে হচ্ছে, পেটে বিদ্যে পিঠে ডিগ্রি নিয়েও একটা চাকরি জোটাতে পারলাম না। যার ফল স্বরূপ আমার ভালোবাসাকে ধরে রাখতে পারলাম না। ব্যার্থ আমি এই জীবনে। তুমি বলেছিলে তোমার বিয়ে ঠিক হচ্ছে। তুমি এ-ও বলেছিলে আমরা পালিয়ে বিয়ে করব। আমি বুকে
পাথর রেখে বলেছিলাম, না তোমাকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করতে পারব না। আজ বলি কেন বলেছিলাম, আমার টিউশনির ওই কটা টাকায় সংসার পাতব তাতে তোমাকে কষ্ট করে চলতে হবে সেই কথা ভেবে পিছিয়ে গেছি। নিজের সাথে কত যুদ্ধ করেছি। একটাই উত্তর মনে এসেছে তোমাকে সুখি থাকতে দেখা যা আজ দেখলাম দূর থেকে সার্থক হলো আমার চোখ। ভালো থেকো তরী, খুব ভালো থেকো। আমি আছি নিবিড় রাতের নিরালা ব্যালকনিতে সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে আর তোমার স্মৃতি নিয়ে।
ইতি
তোমার বাউন্ডুলে