বদলে যাওয়া বিদ্যাসাগর
অলকেশ মাইতি
সময়ের সাথে বিদ্যাসাগরও বদলে গেলেন!
সেই দামোদর, কার্মাটা, জঙ্গল, রাঙামাটি
আগের মতোই আছে!
বদলে যাওয়া দিনগুলোতে
আমরা কেবল
বদলে ফেলি তাঁকে!
বিদ্যাগরকে তেমনভাবে
আজ আর প্রয়োজন নেই ব’লে যে লোকটা
এতগুলো শাবল দিয়ে
মূর্তিটা ভাঙলো,
সেও তাঁর গলায় মালা পরিয়ে বলে—-” ভুলছি না ভুলবো না , বিদ্যাসাগরের আদর্শ
ছড়িয়ে দিতে হবে
সমাজের সব দিকে।”
তারপর সেই লোকটা গুগুলের পাতা উল্টে দেখে বিদ্যাসাগর জন্মেছিলেন কবে!”
যে লোকটা বলেছিল—- ” বিদ্যাসাগর ‘সহজ পাঠ’ লিখে অমর হয়ে আছেন।”
সেই লোকটাও মালা পরিয়ে বলে —– ” বিদ্যাসাগর না থাকলে , আমাদের কী যে হতো!”
যে লোকটা বিদ্যাসাগরের মূর্তি উন্মোচন করলো,
সেও তাঁর গলায় মালা পরিয়ে বললো—-
“বিদ্যাসাগর মাইল আবিষ্কার ক’রে জগতে বিখ্যাত হয়ে আছেন!”
আমরা মুগ্ধ হয়ে সেই লোকগুলোর কথা শুনি আর হাততালি দিয়ে
আকাশ বিদীর্ণ করি।
লোকগুলোর জ্ঞানের গরিমা দেখে বিদ্যাসাগর গবেষকেরা
নিজেদের অপরাধী মনে করেন—–!
আমরা ফি-বছরে
বদলে যাওয়া বিদ্যাসাগরের রূপকারদের আবার ডাকি বিদ্যাসাগরকে নিয়ে তাঁদের মূল্যবান মূল্যায়ণ শুনাবার জন্য,
লোকে লোকে
জমিয়ে ফেলি আসর,
কোটি টাকা খরচ ক’রে
বুক চাপড়ে বলি—-
” আমরা সাড়ম্বরে বিদ্যাসাগরের ২০০তম
জন্মোৎসব পালন করছি
জগৎ জুড়ে। ” —
তারপর কে ঈশ্বরচন্দ্র
আর কে বিদ্যাসাগর গুলিয়ে ফেলে
বাড়ি ফিরি ও নিশ্চিন্ত ঘুমে ডুব দিই নির্দ্বিধায়!