রাজনীতির সামাজিকরণ ও আজকের আমরা
খগেন্দ্রনাথ অধিকারী
১৯১৭ সালের মহান নভেম্বর বিপ্লবের পর পুঁজিবাদী বিশ্বে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য কার্ল পপার, সরোকিন প্রমুখ উদারনৈতিক গণতন্ত্রের প্রবক্তরা তুমুল চর্চা শুরু করেন এবং তারই ফলশ্রুতিতে “Socialization of Politcs” বা রাজনীতির সামাজিকরণ তত্ত্ব জন্ম নেয়। এই তত্ত্বের মূল কথা হোল যে সমাজসেবার মাধ্যমে তাঁদের রাজনীতির গ্রহণযোগত্যা সাধারণ মানুষের কাছে বাড়াতে হবে। ঠিক একইভাবে কমরেড লেনিন, স্টালিন প্রমুখ বলশেভিক নেতারাও তাঁদের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের দর্শনের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য সমাজ সেবার মাধ্যমে তাঁদের রাজনীতির নির্যাস খেটে খাওয়া মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। উল্লেখ্য যে ১৮৪৮ সালে প্রকাশিত কার্ল মার্কস–ফ্রেডারেখ এঙ্গেলস-এর কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তেহারের আহ্বানে অনুপ্রাণিত হয়ে ফ্রান্সের রাজধানী শহর প্যারিসে ১৮৭১ সালে সেখানকার শ্রমিকরা একটি কমিউন বা সাম্যবাদী প্রশাসন কায়েম করে। মহাভারতে সপ্তরথী যেমন চক্রব্যূহের মধ্যে একাকী পেয়ে বালক অভিমন্যুকে নিষ্ঠুরভাবে বধ করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে বিশ্বজুড়ে পুঁজিপতিদের শাসনের মধ্যে একাকী ঐ শ্রমিক শ্রেনীর প্রশাসনকে পেয়ে চরম বর্বরতার সঙ্গে তারা এটা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয় এবং সদম্ভে মহাউল্লাসে ঘোষণা করতে থাকে যে মার্কসবাদ–লেনিনবাদ হোল উন্মাদের মতবাদ। কাজেই অক্টোবর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী ব্যবস্থা রাশিয়ার বুকে গড়ে উঠেছে, তার পরমায়ু ক্ষণিক।
কিন্তু বাস্তবে যখন ধীরে ধীরে বলশেভিক সরকার রাশিয়ার শ্রমজীবি জনগণের সমর্থন লাভ করতে লাগলো, তখন তৎকালীন বিশ্ব পুঁজিবাদের মহানায়ক গ্রেট ব্রিটেনের নেতৃত্বে প্রতিক্রিয়াশীলরা বলশেভিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লব ঘটানোর তোড়জোড় শুরু করলেন। এই মহাসংকটে প্রতি বিপ্লবীদের হাত থেকে বলশেভিক সরকারকে বাঁচাতে কমরেড লেনিন ও কমরেড স্টালিন পূর্ব্বোলিখিত রাজনীতির সামাজিকীকরণের উপর জোর দেন অর্থাৎ ব্যাপক সমাজ সেবার মাধ্যমে তাঁদের রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতা সর্ব্বহারা মানুষদের কাছে বৃদ্ধি করেন। বলেশেভিক বিপ্লব বিরোধী প্রতি বিপ্লব এইভাবে চূর্ণ হয়।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সোভিয়েত লালফৌজ কমরেড স্টালিনের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদও নাৎসীবাদের বিরুদ্ধে যে মৃত্যুঞ্জয়ী সংগ্রাম লড়ে সভ্যতার শত্রু হিটলার–মুসোলিনী–তোজোদের শ্মশান শয্যা রচনা করেছিলেনন এবং সমগ্র পূর্ব্ব ইউরোপকে মুক্ত করে সেখানে লাল পতাকার শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তার ফলশ্রুতিতে দুনিয়াজুড়ে, বিশেষকরে এশিয়া–আফ্রিকা ও ল্যাতিন আমেরিকার দেশে দেশে, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ে। এই মহাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাদী দুনিয়ার বিশ্বজোড়া নায়ক হিসাবে উদ্ভূত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার নখদাঁত বার করে প্রগতিশীল আন্দোলনকে ক্ষতবিক্ষত করতে দেশে দেশে ঝাঁপিয়ে পড়ে। “Marshall Plan” (তৎকালীন মার্কিন অর্থমন্ত্রী)-এর মাধ্যমে বিশ্বের দারিদ্র্যক্লিষ্ট দেশগুলিকে ঢালাও অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদানের কর্মসূচী নেয় ওয়াশিংটন। অন্যদিকে ট্রুম্যান নীতির মাধ্যমে (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে মার্কিন রাষ্ট্রপতি) দেশে দেশে বাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দেবার কার্যক্রম নেয় পেন্টাগন।
এই প্রক্রিয়ায় মহাযুদ্ধের অব্যবহিত পরে গ্রীস ও সাইপ্রাস সংকট অর্থাৎ তুরস্ক সংকট উপস্থিত হয়। ভূমধ্যসাগরের তরঙ্গবিধৌত এই অঞ্চলে শোষিত মানুষ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে উদ্বেল হয়ে ওঠেন। ধর্মীয় জিগির তুলে, মুসলিম উলেমাদেরকে বিপথে চালিত করে আমেরিকা এই আন্দোলনকে বানচাল করার চেষ্টা করে। তবু পারেনি। তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মোহনী জননেতা, “জেলখানার চিঠি” খ্যাত কিম্বদন্তী কবি, নাজিম হিকমৎ তাঁর সহযোদ্ধাদের আহ্বান দেন সমাজসেবার মাধ্যমে মার্কিন ডলারের উচ্ছিষ্টভোগী প্রতিক্রিয়াশীলদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের নির্যাসকে খেটে খাওয়া মানুষদের কাছে পৌঁছে দিতে। এই আহ্বানে কাজ হয়। দিশেহারা হয়ে পড়ে প্রতিক্রিয়াশীলরা। অনন্যোপায় হয়ে ওদের পরিত্রাতা রাষ্ট্রপতি হ্যারিট্রুম্যান ১৯৪৭ সালে সামরিক হস্তক্ষেপ করেন তুরস্কে। ভূমধ্যসাগরের জল, আঙ্কারার রাজপথ হাজার হাজার শোষণ মুক্তির লড়াইয়ে অকুতোভয় যোদ্ধার রক্তে লালে লাল হয়।
নিশ্চয়ই সমাজন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এটা একটা বিপর্যয়। কিন্তু কমরেড লেনিন তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতায় বলেছেন, “One step forward, two steps back”, বিপ্লবীদেরকে কখনো কখনো একপা এগিয়ে, দুইপা পেছাতে হয়। ঠিক তাই। তুরস্কে সমাজতন্ত্রীদের বিপর্যয় হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ঐ সমসাময়িককালে সর্ব্বহারা মানুষদের সংগ্রাম অভূতপূর্ব্ব সাফল্য লাভ করে। চীন,মিশর, প্রমুখ দেশ তার প্রমাণ। চীন বরাবরই ছিল প্রাক-বৈপ্লবিক স্তরে একটি কৃষি প্রধান দেশ। হোয়াংহো এই দেশের সর্ববৃহৎ একটি নদী এবং এটি ছিল বন্যা প্রবণ। চীনের শাসকগোষ্ঠী,কি চিয়াং কাই শেক,কি তাঁর পূর্বসূরিরা , কেউই এই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য কোন কিছুই করেননি।”চীনা বাসীর দুঃখ নামে এই নদীটি আখ্যাত হয়েছিল। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ত্রয়ী নেতা লিউ লাউ চি-মাও সে তুং -চৌ এন লাই ডাক দিলেন চীনা বাসীর উদ্দেশ্যে,”হোয়াংহোর দুঃখ আমরা দূর কোরবোই কোরবো।”অর্থাৎ সমাজসেবার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের নির্যাসকে তাঁরা চীনা জনগণের কাছে নিয়ে গেলেন। বেসরকারি উদ্যোগে, জণগণের অকুণ্ঠ সমর্থনে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি হোয়াংহোর বাঁধ বাঁধলো।চীনা জনগণের দুঃখ ছুঁচলো। বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়লো চীনা কমিউনিস্ট পার্টির।১৯৪৯ সালের অক্টোবর মাসে চীনের মাটিতে সর্বহারার বিপ্লবের মূল সহায়ক শক্তি ছিল এটি।
ঠিক একই সময়কালের
আর একটি ঘটনার ক্ষেত্র হোল মিশর। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে
সোভিয়েত লালফৌজের বিজয় আফ্রো-এশীয়-ল্যাতিন
আমেরিকানিয়ো দেশগুলি
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জনগণকে দারুনভাবে আলোড়িত করে। মধ্যপ্রাচ্যে
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের তেলের শোষণ ভিত্তিক রাজনীতির
বিরুদ্ধে আরব জাতীয়তাবাদের জন্ম হয় যার নেতা ছিলেন মিশরের রাষ্ট্রপতি আব্দেল নাসের।
প্রকাশ থাকে যে মরুভূমির দেশ হোল মিশর। নীল নদই হোল এর ভরসা। বলা হতো “মিশর নীল নদের দান।” বন্যাপ্রবণ এই নদীতে যেবার বন্যা হোত সেবার বন্যার আশীর্বাদে মিশরে ব্যাপক ফলন হোত। কিন্তু যে বছর বন্যা হোত না, সে বছর জুটতো মিশরবাসীর কপালে খরা। আমেরিকা এই অবস্থার পূর্ণ সুযোগ নিয়ে অতিকম মূল্যে মিশর থেকে তেল আমদানি কোরত, আর অতি বেশী মূল্যে কায়রোকে গম, যব, ইত্যাদি খাদ্যশস্য রপ্তানি কোরতো। এই শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান রাষ্ট্রপতি আব্দেল নাসের। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার কায়েমী স্বার্থে নাসেরকে খুন করার পরিকল্পনা করল। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ভূমিকার জন্য নাসের খুবই ক্রেমলিন ঘনিষ্ঠ হন। এতে মওকা পেয়ে যায় সি. আই. এ। কমিউনিস্টরা ধর্ম মানে না, আর সেই বিধর্মীদের শিরোমণি সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েতের সঙ্গে নাসের “দোস্তি” পাতিয়েছে, অতএব দুনিয়া থেকে “এই কাফের”কে এখনই সরাতে হবে, এই ধূয়ো তুলে হাজার হাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যায় করে সে উগ্র মৌলবাদী উলেমাদেরকে কিনে ফেলল এবং তাদের মদতে সে “Muslim Brotherhood” নামে একটি জঙ্গী ইসলামী সংগঠন তৈরী করলো দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে ও নাসেরকে খুন করতে। আলেকজান্দ্রিয়ায় বক্তৃতা করার সময় এই সংগঠন নাসেরের উপর গুলি চালায়, তবে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এই বিশৃঙ্খলাকর অবস্থার নিয়ন্ত্রনের জন্য নাসের পূর্ব্বোল্লিখিত রাজনীতির সামাজিকরণের উপর জোর দেন। সমাজ সেবার মাধ্যমে তিনি তাঁর আরব জাতীয়তাবাদের নির্যাসকে মিশরবাসীর কাছে তুলে ধরার প্রয়াস চালান। এই উদ্দেশ্যে মিশরকে শস্যশ্যামল করার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার থেকে সাহায্য নিয়ে আসোয়ান বাঁধ নির্মাণে উদ্যোগী হন। হোয়াইট হাউস কলকাঠি নেড়ে IMF কে বিরূপ করে দেয়। মিশরবাসীর তথা রাষ্ট্রপতি নাসেরের এই বিপদে সোভিয়েত ইউনিয়ন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। বুলগালিন–ক্রুশ্চেভের সহযোগিতায় আসোয়ান বাঁধ নির্মিত হয়। সাইবেরিয়া থেকে পাইপ লাইনে বরফ গলা জল নিয়ে মিশরকে শস্য শ্যামল করা হয়। মিশরবাসীর দুঃখ মোচন হয়। নাসেরের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে মিশরবাসীদের কাছে। এই অস্ত্রে নাসের ভোতা করেছেন আইসেন হাওয়ার–জনসনদের ষড়যন্ত্রের কৃপাণ।
ঠিক একই রাস্তা ধরে কমরেড ফিদেল কাস্ত্রো–চেগুয়েভারা মার্কিন চক্রান্তকে গুঁড়িয়ে দেন। ১৯৫৯ সালে যখন এই মহান দুই বিপ্লবী বাতিস্তা সরকারকে উচ্ছেদ করে হাভানার বুকে সমাজতান্ত্রিক সরকারের রক্ত নিশান ওড়াল, তখন মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এই সরকারকে উচ্ছেদের জন্য প্রতিবিপ্লবীবাদের উস্কানি দিতে থাকে। সর্ব্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদের পতাকা উড়িয়ে ক্রেমলিন কিউবা সরকারের পাশে দাঁড়ায়। ক্ষমতাস্পর্ধিত মার্কিন রাষ্ট্রপতি কেনেডি বাধ্য হন ওয়াশিংটন সম্মেলনের মাধ্যমে কাস্ত্রো–সরকারকে কিউবার বৈধ সরকার হিসাবে মেনে নিতে। মনে রাখতে হবে যে সর্ব্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদের অতন্দ্রপ্রহরী লাল সোভিয়েতের সক্রিয় ভূমিকা নিঃসন্দেহে কিউবার বিপ্লবকে রক্ষার ক্ষেত্রে মৌলিক অবদান রেখেছে ,সন্দেহ নেই। কিন্তু সেটাই সব ছিল না। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রতিবিপ্লবী চক্রান্তকে রুখতে কাস্ত্রো–চে জুটি মার্কসবাদ–লেনিনবাদকে সেবামূলক কাজের মধ্য দিয়ে বিপন্ন কিউবাবাসীর কাছে তুলে ধরেন। বিশেষকরে, পেশায় চিকিৎসক, কমরেড চেগুয়েভারার নেতৃত্বে বিশাল স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়, যেটা বাতিস্তা আমলের রোগ ও অপুষ্টিতে ক্ষতবিক্ষত কিউবাবাসীর হৃদয়কে স্পর্শ করে। এই ঘটনা কাস্ত্রো সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাস যোগ্যতাকে জনগণের কাছে বাড়িয়ে দেয়। কিউবা সংকটে বুলগালিন–ক্রুশ্চেভের বন্ধুত্বপূর্ণ ভূমিকার পাশাপাশি এই উপাদানও ছিল কেনেডির দম্ভচূর্ণ করার অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
আমরা যদি সত্তরের দশকের গোড়ায় চিলির অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে দেখতে পাবো যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি সালভাদোর আলেন্দেকে উৎখাত ও খুন করে তার তাঁবেদার পিনোচেতকে বসাতে পেরেছিল বটে, কিন্তু তাঁর সহযোদ্ধা বিশ্ববন্দিত কবি পাবলো নেরুদা প্রমুখ বামপন্থী–কমিউনিস্ট নেতারা নিবিড়ভাবে চিলিবাসীর কাছে রাজনীতির সামাজিকীকরণ অর্থাৎ সেবামূলক কাজের মাধ্যমে সমাজতন্ত্রবাদের আদর্শকে তুলে ধরেছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে পিনোচেত সরকারের অপসারণে অনিবার্য হয় এবং বামপন্থীরা সেখানে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়।
আফগানিস্থানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রতিবিপ্লবী চক্রান্তের বিরুদ্ধে সর্ব্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রতি অবিচল থেকে ক্রেমলিন কাবুলে যে সামরিক সাহায্য প্রদান করেছিল, তার সুফল নিশ্চয়ই কমবেশী বারবাক ফারমালের আমল থেকে ডঃ নজিবুল্লার আমল পর্যন্ত কুড়ি বছরকাল People’s Democratic Party Of AF-এর শাসনকে হিন্দুকুশের পাদদেশে চীনের সর্ব্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদ বিরোধী তথা মার্কিন সাহায্যকারী ভূমিকা ও পেন্টাগনের হিংস্রপশুর মতো নরখাদক ভূমিকাকে যুঝে টিঁকে থাকতে সাহায্য করেছে। কিন্তু, সেই সঙ্গে এটাও ভোলার নয় যে PDPA কারমাল-নজিবুল্লাদের নেতৃত্বে যে রাজনীতির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার পথ নিয়েছিলেন, তার ফলে কাবুল নদীর জলে সেচ তথা ক্ষুদ্র সেচ, ভূমিসংস্কার ইত্যাদির মাধ্যমে গরীব মানুষদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।
তাই আজ ভারতবাসীসহ আধুনিক বিশ্বের সকল দেশের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষদেরকে এই দিকটি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। দুনিয়াজোড়া মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার উচ্ছিষ্টভোগীদের চক্রান্তকে রুখে পৃথিবীকে “শিশুর বাসযোগ্য” রাখতে ।
লেখক পরিচিতি
অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ অধিকারী রাষ্ট্রীয় বিদ্যাসরস্বতী পুরস্কার ও এশিয়া প্যাসিফিক পুরস্কার সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু পুরস্কার প্রাপ্ত একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। ইনি কোলকাতার সাউথ সিটি (দিবা) কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
ঠিকানা-শরনিয়ার বাগান
পোষ্ট-টাকী, পিন-৭৪৩৪২৯
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
ফোন-৯৪৩৪৩৮৫৪৮৩