তুমি ফিরে এসো মহারাজা,তোমার আসন আজও শূন্য
বটু কৃষ্ণ হালদার
তোমরা আমায় রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো
এই ছিল তোমার উক্তি
ভারত বর্ষ স্বাধীন হল কিন্তু মিললো কি তোমার যুক্তি?
যে অখণ্ড ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলে,তা অধরা রয়ে গেছে সুপ্ত হৃদয়ের মাঝে।
এখন ও মাঝে মাঝে দুর হতে ভেসে আসে, সেই চেনা প্রতিবাদী গান টা,”_মাগো ভাবনা কেন/
আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে/
তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি/
তোমার ভয় নেই মা/আমরা প্রতিবাদ করতে জানি।
সত্যই কি এই সময় আমরা প্রতিবাদ করতে জানি?
না কি আজ ভুলে গেছি প্রতিবাদের ভাষা?
তুমি দেশ ছেড়ে যাবার পর প্রতিবাদের ভাষা, মানচিত্রে মুখ থুবড়ে পড়েছে,
প্রতিবাদীদের শীরদাঁড়া ভেঙে দেওয়া হয় প্রকাশ্যে,
নয় তো বুলেটের গুলিতে বুক ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়।
সেই রক্তে হাত রঙিন করে খেলা হয় রঙিন বসন্তের দোল
তুমি ফিরে এসো হে বীর,অসীম,অনন্ত নীলিময় নীল হয়ে।
মিথ্যা স্বাধীনতার নামে কিছু স্বার্থবাদী বর্বর অসভ্য নোংরা ছেলে জুটে
তাদের উত্তর সুরীরা আজ দেশের সম্পদ খাচ্ছে লুঠে পুটে।
ভারত চীন,জাপান,জার্মান ঘুরে চলে গেছো আজ তুমি বহুদূরে
ফিরে এলে নাতো আর
আজকে যা কিছু আঙুল দিয়ে ছুঁয়েছি,উপভোগ করছি
মিছে নয় সবই কিছু তোমার সিংহ দুয়ার।
তাই তোমাকে যে ফিরে আসতেই হবে
কারণ তোমার সিংহাসন আজও শূন্য
আমরা যারা তোমায় ভালো বাসি,তোমার নামে মালা জপি সন্ধ্যা সকাল, আমরা যারা তোমায় বিশ্বাস করি
তুমি অমর,তুমি আবার আসবে ফিরে স্ব_মহিমায়, স্ব_শরীরে, বীর বিক্রমে
তোমাকে যে আসতেই হবে ফিরে এই জরা জীর্ণ বঙ্গে
তোমার মৃত্যু আমরা মানি না,
কেঁদে কেঁদে চোখের জল শুকিয়ে গেছে
বঙ্গ জননী, আজও দুয়ারে দাঁড়িয়ে,তোমায় বরণ করবে বলে প্রদীপ খানি জ্বালিয়ে রোজ অপেক্ষা করে।
নগরের প্রান্ত হতে ও প্রান্ত ঘুরে বেড়ায়, প্রতিটি অলিগলি, রাজপথ, ওই ঘুমন্ত ফুটপাথ বাসি,উলঙ্ পথ শিশুদের অনাহারে মৃত্যুর পরোয়ানা জারির মাঝে।
স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরে রক্ষকরা আজ ভক্ষক হয়ে উঠেছে
সভ্যতা,সংস্কৃতি আইন কানুনকে বিসর্জন দিয়েছে পচা নর্দমার জলে
নিজেরাই আজ পুতুল নাচের আসরের বিধাতা
দেশটাকে বিলিয়ে দিতে চলেছে বৈদেশিক মুদ্রার প্রলোভনে।
চলেছে আখের গোছানোর প্রতিযোগিতার লড়াই
তবে তুমি কেনো আজ মুখ লুকিয়ে রাখবে?
কি ছিল তোমার অপরাধ?
জানতে চায়নি কেউ কোনোদিন
কেনো?
কিসের ভয়ে তোমাকে রাষ্ট্র সঙ্ঘের হাতে তুলে দেবার প্রতিশ্রুতির সময় ১৯৯৯ টা কে বাড়িয়ে ২০২১ করা হয়েছে?
প্রশ্ন করেনি কেউ,
তবে জাপানের তাইহোকু বিমান বন্দরে বিমান দুর্ঘটনায় তোমার মৃত্যুর রহস্য,এই সব যে মিথ্যা, বুজরুকি, ছেলে ভোলানো,সাজানো নিছক কাহিনী তা আমার মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।
বর্বর স্বার্থবাদীরা তো ভয় পাবেই
,যদি স্ব মহিমায় ফিরে আসো আবার তবে মিথ্যা হয়ে যাবে এই সব ইতিহাস,মহিমা মাটির ধুলায় লুন্ঠিত হবে,গৌরব অধ্যায় ম্লান হয়ে যাবে।
কারণ তুমি তো শিখিয়েছো, অত্যাচারীরা ভয় পাবে আর প্রতিবাদীরা শিরদাঁড়া সোজা করে থাকবে।
কেঁচো খুঁজতে খুঁজতে কেউটে সাপ বেরিয়ে আসবে
বন্ধ হয়ে যাবে ছলনাময়দের ছল,চাতুরি,বুজরুকি মিথ্যা সাজানো ব্রজবুলি
বন্ধ হয়ে যাবে নোংরা রাজনীতির নামে লুঠ পাঠের খেলা
কুসংস্কারের আছন্ন থেকে মুক্তি পাবে এই সমাজ
আবার নতুন আন্দোলনের জোয়ার আসবে
অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জেগে উঠবে যুব সমাজ
তারই তো ভয়,এই ভয়, মিথ্যাটাকে সঙ্গী করে বয়ে নিয়ে চলেছি যুগের পর যুগ
বিশ্বাস করি তুমি আসবে ফিরে স্ব_মহিমায়, স্ব_ শরীরে
তুমি বীর, অসীম, অনন্ত
তুমি ফিরে এসো বঙ্গ ললনার বুক চিরে,কালো আঁধারে ঢাকা আকাশকে কঠিন বজ্রের দ্যুতি দিয়ে
তছনছ করে দাও আঁধারের বেড়াজাল।
তুমি ফিরে এসো ছত্রপতি শিবাজির তরবারি হয়ে
তুমি ফিরে এসো হে সত্য,ন্যায় এর তরবারি হয়ে
বন্ধ করে দাও সবার চক্রান্ত, রক্তে রাঙানো হোলি খেলা
রোজ রোজ তাজা তাজা রক্তে রঙিন হয়ে ওঠে কাঁটা তারের বেড়া
হাজারো মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিতে তুমি আবার আসবে ফিরে
তুমি ফিরে স্বার্থান্বেষী তুঘলকদের আত্ম অহংকার ধ্বংস করে নব বধূর বেশে সাজাবে
যে দেশটাকে মায়ের,ভাইয়ের,বোনের ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলতে চেয়েছিলে।
সত্য ন্যায় দিয়ে মুড়ে দাও,আমরা তার জীবন্ত সাক্ষী হয়ে থাকবো,তোমার হাতে ধ্বংস হয়ে পাপ মোচন করে নেবো।
সোনালী রঙিন খামে মোড়া চিঠি দিও,মেঘের ঠিকানায়/নয়তো দখিনা বাতাসের হাত দিয়ে
আমরা থাকব তারই অপেক্ষায়,
হয় তো কোনো এক রঙিন বসন্তের সকালে
তুমি এসে দরজায় টোকা দিয়ে বলবে
ওঠো, জাগো আমি এসেছি ফিরে তোমাদের মুক্তি দাতা হয়ে।।
বটু কৃষ্ণ হালদার,কলকাতা_104,