Spread the love
ঝাড়খণ্ড থেকে শালীমার গার্ডেন
©অঞ্জলি দে নন্দী, মম
এখানে একটি মাল্টিস্টোরি বিল্ডিং-এর ফ্রন্ট সাইডের টপ ফ্লোরের একটি টু বি. এইচ. কে. ফ্ল্যাটে কুমার ফ্যামিলি থাকে। ওরা ঝাড়খণ্ড থেকে উত্তর ভারতে এসেছিল। কর্মসূত্রেই তো বেশিরভাগ মানুষ জন্মস্থান ছেড়ে অন্যত্র বাস করে। এরাও তাই। এদের ব্যাক সাইডে, টপ ফ্লোরের একটি টু বি. এইচ. কে. ফ্ল্যাট ক্রয় করে দে ফ্যামিলি থাকে। দেয়েদের রুফ রাইট সমেত কেনা। তাই ওরা ছাদে নিজেরাই একটি মন্দির বানিয়ে নিয়ে সেখানে বাঙালীর পূজ্য দেবদেবীর মাটির মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা নিজেরা ও বিল্ডিং-এর সবাই ওখানে এসে পুজো করে। এই বিল্ডিং-এর এক পরিবার ঋষিকেশ থেকে এসেছে। আর এক পরিবার কাশ্মীর থেকে এসেছে। অন্য আরেক পরিবার বিহার থেকে এসেছে। অপর এক পরিবার পাঞ্জাব থেকে এসেছে। এক পরিবার রাজস্থান থেকে আসা। এক পরিবার আগ্রা থেকে আসা। 
তো ঝাড়খণ্ড থেকে যে ফ্যামিলি এসে এখানে আছে তাদের জয়েন্ট ফ্যামিলি। বড় ছেলে এক টেষ্ট ল্যাবে জব করে। বাড়ি বাড়ি বাড়ি গিয়ে শ্যাম্পেল কালেক্ট করে এনে ‘লাল প্যাথলজি’তে দেয়। ব্লাড শ্যাম্পেলই বেশি কালেক্ট করে। অন্য কিছুও করে। এর জন্য সে ল্যাব থেকে কমিশন পায়। মিষ্টার কুমারের স্ত্রী টিপ সই। আনপার। আর স্বামী ঝাড়খণ্ডের তার গ্রামের স্কুল থেকে এইট পাস করে এক ডাক্তারের ডিস্পেন্সারিতে কাজ করত। এরপর এখানে জব পেয়েছে, সে এক মন্ত্রীর সোর্সে। এই মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের গ্রাম থেকেই যোগাযোগ ছিল। মন্ত্রীর কোনো এক আত্মীয় ওই গ্রামে আছে। তাই যাওয়া আসা করত। আর সেই সূত্রেই এদের সঙ্গে আলাপ পরিচয়। আর দিল্লীতে চাকরী পাওয়া ও আসা। তা যা হোক, অঙ্গুঠা ছাপ হলেও মিসেস কুমারের ব্রেন যে কোনও উচ্চ শিক্ষিত বা শিক্ষতাকে ঘোল খাইয়ে দেয়। এরকম স্যাম্পল ক্যারেক্টার তো সমাজ সংসারে অনেকেই পাওয়া যায়। এখন এ হাউস ওয়াইফ তবে যখন ওরা দিল্লীতে থাকতো তখন ঐ মন্ত্রীর বাড়িতে ও রাঁধুনীর কাজ করত। মন্ত্রীর ওখানেই থাকতো ওরা সবাই। আর তাই এদের পলিটিক্স বুদ্ধি খুব প্রখর। মিসেস দে এই পরিবারের একেবারে হৃদয়ে স্থান পেয়েছে। ক্যানো? তা দে নিজেও বোঝে না। যাক, পাওয়াটাই বড় ব্যাপার। তো এরা সবাই দে-কে “বহিনজি” বলে ডাকে। মেজো কুমারকে বড়দা দিল্লীরই একটি ফার্মেসীতে কাজে ঢুকিয়ে দিয়েছে। সেও গ্রাম থেকে টেন পাস করে এসেছিল। এর বউ গ্রাম থেকে বারো ক্লাস পাস করে, বিয়ের পর, একে ওখানেই পতিরূপে পেয়ে, এখন এখানের বাসিন্দা। আর ছোট ছেলেটি গ্রাম থেকে বারো ক্লাস পাস করে, এখন দিল্লীতে একটি প্রাইভেট নার্সিং হোমের ওয়ার্ড বয়। সে আবার তার ক্যান্টিন থেকে রোজ বাড়ি ফেরার সময় অনেক ভালো ভালো ভালো খাবার ফ্রীতে নিয়ে আসে। তাই এদের খাওয়া খরচ খানিকটা বেঁচে যায়। এর বউও গ্রাম থেকে বারো ক্লাস পাসের পর, বিয়ের সূত্রে বরের সঙ্গে এখানে আসে। এসে করস্পন্ডেন্স কোর্সে ভর্তি হয়ে সে বি. এ. পাস করে। এই ছোট ভাইটিকেও বড়দা সোর্স কাজে লাগিয়ে নার্সিং হোমে ঢুকিয়ে দেয়। বড়র প্রথম ছেলে ও ছোট মেয়ে। মেজোর প্রথম মেয়ে ও ছোট ছেলে। ছোটর এক মেয়ে। মেজোর মেয়েটি বিকলাঙ্গ। মেজো বউটি যখন ছাদে মেয়েকে কোলে  নিয়ে ঘোরে, তখন সাথীরূপী দে-কে মনের কথা বলে, ”  সপ্তাহ কাটে। মাস কাটে। বছর কাটে…. আমি ভাবি এই বুঝি আমার মেয়ে দাঁড়াবে? হাঁটবে! … কিন্তু হায়! বছরের পর বছর কেটে গেল। কত মানত করলুম। কত চিকিৎসা করলুম। মেয়ে আর হাঁটলো না তবুও। এটা কী ভাগ্য নয়? বলো তো? ” দে কিছুই জবাব দিতে পারে না। সে বলে, ” ভাবী! তুমি ওকে ওদের জন্য যে স্পেশাল স্কুল আছে সেখানে ভর্তি করে দাও! দেখো তাহলে ওর ভবিষ্যত ভালো হয়ে যাবে। ” ও বলে, ” আমাদের পরিবারের কেউই তা আমাকে করতে দিচ্ছে না। তুমি তো আগেও আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলে। তো ওরা তো তোমাকে বলল যে, না না এরকমই বেশ আছে। আমি আর কী করতে পারি বল? ” দে চুপ হয়ে যায়। এবার এই ব্যাপারে মেজো বউটি সংসারে প্রতিবাদ করে। ফল? হ্যাঁ, এই পায় সে….ওর বর মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করার নাম করে মা ও মেয়েকে নিয়ে অটোরিক্সা করে বের হয়। তারপর বাসে করে যায়। বহু দূরে নিয়ে গিয়ে – অন্য এক জায়গায়। সেখানে থাকে। একটি পাহাড়ী ধর্মশালায়। বলে স্কুলটি এখানেই। এরপর ও ওদের নিয়ে একটি জঙ্গলে যায়। বলে যে আজই ভর্তি হবে। এই বলে ধর্মশালা থেকে বের হয়। জঙ্গলে অনেক সময় ঘোরে। যখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে তখন বউটি জিজ্ঞেস করে, ” কি গো, স্কুলের কি হল? ” এরপর ও বলে, ” এই তো আর একটু পরই স্কুলের বোডিং পৌঁছে যাব। ” রাত বাড়ে। হঠাৎ পতিদেব মহাশয় বলে, ” তোমরা এখানে একটু অপেক্ষা করো! আমি পায়খানা করে আসছি। ” এই বলে সে অন্ধকারে ওদের দাঁড় করিয়ে রেখে সেই যে গ্যালো আর ফিরলো না। বউটি সকালে ধর্মশালায় এলো। শুনলো তার স্বামী সেখানে আসে নি। ও এবার নিজের ফ্ল্যাটে মেয়েকে নিয়ে ফিরল। এরপর ও আর কোনদিন মেয়ের নিয়ে কাউকে কোনও কথা বলত না। ছাদে ঘোরার সময় মেজো বউটি বলে, ” আমার বর ও আমার বড় জা এক বিছানায় শুতো। ” সত্যি কথা। সব সময়ই মেজোকাকু তার ভাইঝি ও ভাইপোকে আদর করে। নিজের সন্তানদের প্রতি কোনও ভ্রুক্ষেপ করে না। এরপর কয়েকমাস কেটে গেছে। মেজো বউটি একটি প্রাইভেট স্কুলে আয়ার চাকরী জোগাড় করল। হ্যাঁ, ঐ স্কুলেই ওর জায়ের ছেলেমেয়ে ও ওর ছেলে পড়ে। ছোট দেওরের বাচ্চা তো এখন একদম ছোট তাই স্কুলে ভর্তি হয় নি এখনও। তা হল কি? যেদিন ও স্কুলে আয়ার কাজ করতে প্রথম বের হবে, সেদিন, বর জা ও ওর বর দুজনে মিলে ওকে চেপে ধরে প্রচুর ট্যাবলেট গেলালো। ও ওদের জোরের সঙ্গে পেরে উঠলো না।  এরপর যখন ও বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে, এমন সময় মিসেস দে ওদের ফ্ল্যাটে আড্ডা দিতে গ্যালো। প্রায়ই এরকম যায়। ওরাও আসে দেয়ের ফ্ল্যাটে। বিল্ডিং-এর সবাই সবার কাছে আসে। তো দে দেখলো যে ও মেঝেতে পড়ে আছে। তা বড় ভাবীকে জিগ্যেস করল। ও বলল যে এমনিই শুয়ে আছে। কিন্তু দে তার কথা বিশ্বাস না করে কাছে গিয়ে ডাকল, ” মেজো ভাবী! ও ভাবি! ওঠো! ” অনেকবার ডাকলো… কোনও সারা শব্দ নেই। এবার দে বেরিয়ে গিয়ে বিল্ডিং-এর অন্যদের ডেকে আনলো। তো ওরা সবাই মিলে ওকে ধরাধরি করে কাছের এক ডাক্তারখানায় নিয়ে গ্যালো। ডক্টর বললেন, ” এর পেটের মধ্যে প্রচুর ঘুমের ওষুধ গেছে। আমি দেখছি, কি করতে পারি! ” পরে সে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরলো। এরপর থেকে ও এর চাকরী করার চেষ্টা করে না। নিজের মনে বেশিরভাগ সময়ই বিড়বিড় করে। কারোর সঙ্গে কথা বলে না। মেশে না। শুধু সন্তানদের খুবই ভালো করে লালন পালন করে। নিজের শরীরের প্রতি কোনও যত্ন নেয় না। এরপর ওকে ছেলেমেয়ে সমেত গ্রামের বাড়িতে রেখে এলো, ওর বর। আর কোনদিন আনলো না। দরকার নেই যে। ওর তো উপপত্নী ও তার সন্তানরাই আপনজন। আসলে মেজো বউয়ের বাবা গ্রামের ওই স্কুলের শিক্ষক ছিল, যে স্কুল থেকে এরা সবাই পাস করেছে। তাই তার মেয়েকে বিয়ে করেছিল। বেশ টাকাও তো পেয়েছে। মেজো বউটি বলত দেয়ের কাছে, অনেক আগে অবশ্য। তখন তো ও সুস্থ মস্তিষ্কের ছিল। হ্যাঁ বলতো যে তার বর টাকার লোভে তাকে বিয়ে করেছে। সে বলত, ” বলো তো দে বহিনজি! ক্যানো ও আমাকে সাদি করলো? ওর তো বউ, সন্তান সবই বিয়ের আগে থেকেই হয়ে গিয়েছিল। কি দরকার ছিল আমাদের জীবনগুলো বরবাদ করার? ” দে নিরুত্তর থাকতো। এর যে কোনও উত্তর দেয়ের জানা নেই। তবে হ্যাঁ বড় বউটি কিন্তু দে-এর খুব সেবা করেছিল। একবার মিষ্টার দে কর্মসূত্রে মধ্যপ্ৰদেশে বেশ কয়েকমাস ছিল। তো সে প্রতি মাসেই এখানে ওখানে গিয়ে থাকে। পনেরো দিন বাড়ীতে আর পনেরো দিন অন্য রাজ্যে। এবারে টানা বেশ কয়েকটি মাস বাইরে। তো দেয়ের ব্লাড ইনফেকশন হল। বেঙ্গল থেকে তার মা এলো। সেবা করে মেয়েকে সুস্থ করে তুলল। আসার আগে বড় কুমার ভাবি দিনরাত ওর মাথার কাছে জেগে বসে থাকতো। সেবা করত। আর ওর মা যখন খবর পেলো তখন তার ডায়েরিয়ার চিকিৎসা চলছিল। নিজের বাড়িতে সেলাইন চলছিল। ডাক্তার তার খুড়তুতো দেওর। সে বলল, ” বৌদী তুমি এখন অতো দূরে যেও না! পথে বিপদ হতে পারে। ” সে বলল, ” আমার মেয়েকে বাঁচাতে হবে আগে। তারপর অন্য কিছু। ” এইবলে মা সেলাইন খুলিয়ে ভি. আই. পি. কোটায় টিকিট করিয়ে চলে এলো। মায়ের দেওর যে রেলের রিজার্ভেশনের টিকিট কাউন্টারে জব করত। তাই এই সুবিধা পেলো। এসে মেয়ের সঙ্গে কুমার মহিলাকে দেখে একটু স্বস্তি পেলো। হ্যাঁ তার মেয়েকে দেখছে কেউ। পরে মা তাকে একটি রুপোর লাড্ডু গোপাল উপহার হিসেবে দেয়। জন্মাষ্টমীর রাতে। মা তো তখন মেয়ের সেবার জন্য ওখানেই ছিল। জামাই তখনও বাইরেই। খবর পেয়েও এলো না। সম্ভব নয়। অফিসের কাজ। আর এই কুমার ভাবি দে’র ছাদের মন্দির, হয়ে অব্ধি রোজই সাফ করত। আর পুজোও করত। অন্যেরাও বিল্ডিং-এর পুজো করতো। তবে কেউই কোনোদিন মন্দির ধোওয়ামোছা করত না। ও করত রোজ। এই মন্দিরে কুমার ভাবি ছোলেবটুরে করে ভোগ দিত প্রায়ই। আসলে দে ভাবি এগুলো খেতে ভালোবাসে তো তাই …….অন্তরের ভালোবাসা হয় তো একেই বলে…….
মাঝে মধ্যে কুমারের গ্রাম থেকে অনেকেই আসতো। ওরাও দে ভাবীকে আপন করে নিয়েছিল। তারা জুতোহীন, খালী পায়ে, ছোট্ট একটি ধুতি পড়ে, খালি গায়ে, মাথায় গামছা বেঁধে হেঁটে হেঁটে হেঁটে ঝাড়খণ্ড থেকে শালীমার গার্ডেনে আসতো। ওরা গ্রামে জলেতে পোলো দিয়ে মাছ ধরে ও তা বিক্রি করে। পুরুষরা আসতো। মহিলাদের কেউ কখনও আসে নি। কুমার ভাবীর শশুর লেখাপড়া জানে না কিন্তু খুব আধ্যাত্মিক জ্ঞানী। দে-এর সঙ্গে তার খুব জমতো। দু জনেই তো একই লাইনের। দে তো আধ্যাত্মিক আলোচনা পেলে নিজের নাওয়া খাওয়া ভুলে যায়। তাই একজন মনের মতো মানুষ পেয়ে সে খুব আনন্দে আছে। যখনই কুমারের বাবা আসতো, দে নিমন্ত্রণ করে নিজের হাতে রেঁধে তাকে খাওয়াতো। বস্ত্র উপহারও দিত। সিলভার কয়েনও দিত। …
তা যাক- এবার মেয়ে সুস্থ হয়ে গেল। এবার জামাই এলো। মা বেঙ্গলে ফিরে আসবে। তো দে ওর হাসব্যান্ডকে বলল, ” দ্যাখো তুমি ব্যবস্থা কর! আমরা একবার সবাই মিলে হরিদ্বার গিয়ে গঙ্গা স্নান করে আসি। দেয়ের ছেলে তখন প্রাইমারী স্টুডেন্ট। তো মিষ্টার দে চারজনকে নিয়ে যাবে বলে ব্যবস্থা করল। বের হল। যেখান থেকে বাস ছাড়বে সেই টার্মিনালে গিয়ে ওরা তিনজন, দিদিমা, মা ও ছেলে কেউই হঠাৎ করে আর মিষ্টার দেকে খুঁজে পেলো না। মাইকে এনাউন্স করল। তাও সে এলো না। যখন বাস ছেড়ে চলে গেছে, টাইম ওভার হয়ে গেছে, তথন মিষ্টার দে হাঁফাতে হাঁফাতে এসে বলল, ” তোমরা কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলে? আমি তো খুঁজে খুঁজে হয়রান। ” কারোর আর বুঝতে বাকি রইল না। তখন মিসেস দে বলল, ” এসো আমার সঙ্গে! ” এই বলে সে সবাইকে নিয়ে এক ঘন্টা পর যে বাস ছাড়বে তার চারটে টিকিট কেটে নিয়ে, বাসে উঠে বসল। এতো গাদাগাদি যে সে জানলা দিয়ে টোপকে সবার আগে ঢুকে বাসের ভিতররে নিজে একটি সিটে বসে অন্য তিনটি সিট ধরে রাখলো। পরে ওরা ঢুকে তাতে বসল। সে যাত্রায় গঙ্গা স্নান হল। ফিরে এসে মা বেঙ্গল চলে গ্যালো। এর কয়েকমাস পর মিসেস দে-এর বাবা ক্যান্সার হয়ে মারা গ্যালো। মেয়েটি তাকে শেষ দ্যাখাও দেখতে গ্যালো না। সে যে অসহায়। গেলে যে আর তার স্বামী তাকে ঘরে ঢুকতে দেবে না। এরপর কয়েক মাস কেটে গেছে। মেয়েটি এবার এনিমিয়ায় কাবু। জামাই মুম্বাইয়ে। মা আবার এলো। সারিয়ে তুলল। এসে বলল, ” আমি তোর জন্য আসিনি। আমার নাতীর অসুবিধা হবে বলে তাই এলুম। ” মেয়ে খুব হাসলো। …. মায়ের সিঁদুর কৌটোটা এখনও ড্রেসিং টেবিলের ওপর রাখা আছে। মেয়ে তো সিঁদুর পড়ে না। মা আগের বারে এসে রেখে গিয়েছিল। এবার মা আর ওটার দিকে ফিরেও তাকালো না। তার বাবা যে স্বর্গে। মেয়ে তখন ওটিকে কুমার ভাবীকে উপহার দিয়ে দিল। সিঁদুর সমেত চাঁদির সিঁদুর কৌটোটি। মা ওটি বেঙ্গল থেকে আগের বার এনে এখানে রেখে গিয়েছিল। তখনও ওরা কেউই জানতো না যে মা আর এর থেকে সিঁদুর পড়বে না। ভবিষ্যত কে জানতে পারে? এটিই তো চির বিশ্বয়। কেউই কারোর আগামী জানতে পারে না। হায়!…
পরে দে ওই ফ্ল্যাটটি তালা দিয়ে রাখে। আর দিল্লীতে একটি থ্রী বি. এইচ. কে. কিনে শিফট করে। আর মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ বড় কুমার ভাবীই করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *